সাতকানিয়ায় শিমের বাম্পার ফলন বিষমুক্ত হওয়ায় চাহিদা বেশি দেশ-বিদেশে
কেরানীহাট-পার্বত্য জেলা বান্দরবান সড়কের বায়তুল ইজ্জত সত্যপীর পাহাড়ের দক্ষিণে পশ্চিম বাজালিয়ায় বিশাল এলাকাজুড়ে শিম চাষ করা হয়েছে এবার। সরেজমিনে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ জুড়ে শিমক্ষেত ফুলে-ফলে ছেয়ে গেছে। সেইসাথে শিমের মাচার ওপর প্লাস্টিকের বৈয়ামে ফেরোমোন ফাঁদ চোখে পড়ে। এ সময় কৃষকরা শিম তোলা আর শিমের পরিচর্যায় ব্যস্ত ছিলেন। দেখা হলো বয়োবৃদ্ধ চাষী অপূর্ব দাশের সাথে। বাজালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম বাজালিয়া গ্রামের মৃত বিবিসন দাশের পুত্র ষাটোর্ধ্ব বয়সের কৃষক অপূর্ব দাশ। বয়োবৃদ্ধ হলেও অপূর্ব দাশ সুদীর্ঘকাল ধরে কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। আউশ, আমন, বোরো ধান চাষ ছাড়াও আলু, লাউ, মরিচ, বেগুন, মিষ্টি কুমড়া, ঢেড়শ, সরিষা, তিত করল প্রভৃতি চাষ করে আসছিলেন। এবার অপূর্ব দাশ তার কিছু জমিতে একসাথে শষা ও শিম চাষ করেছেন। দু’টি চাষে কানিপ্রতি তার ব্যয় হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। তবে কানিপ্রতি ৭০ হাজার টাকা লাভ হবে বলে আশা করছেন তিনি। পাশাপাশি ভিন্ন জমিতে আলু চাষও করেছেন। বাজালিয়া ইউনিয়নের কৃষক সন্তোষ মহাজন জানান, এ বছর তিনি ৫ কানি জমিতে শিম চাষ করেছেন। কানিপ্রতি তার প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। শিম বিক্রি করে প্রতি কানিতে ৯০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা উপার্জন করতে পারবেন বলে আশা করেন। তিনি জানান, শিমের পোকা দমনে আমরা সবাই ফেরোমোন ফাঁদ ব্যবহারের ফলে জমিতে তেমন কীটনাশক ঔষধ দিতে হয় না এবং উৎপাদন খরচও কম হয়েছে। ৩৯-ঊর্ধ্ব বয়সের শিম চাষী বাসু দেব রুদ্র জানান, দেড় কানি জমিতে তিনি শিম চাষ করেছেন। ফসলও ভাল হবে বলে আশা করছেন। বয়োবৃদ্ধ আরেক কৃষক সাবুল দাশ’র জমিও ফুল-ফলে ভরে উঠেছে।
কৃষক ও সবজি ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সাতকানিয়ার শিম চট্টগ্রাম, পার্বত্য জেলা বান্দরবান ও কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহের পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। বাজালিয়া ইউনিয়নের উপসহকারী কর্মকর্তা টিটু দাশ জানান, বাজালিয়া ইউনিয়নে ২০ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হচ্ছে। তিনি জানান, ইউনিয়নের কৃষকরা শিম ছিদ্রকারী পোকা দমনে ফেরোমোন ফাঁদ ব্যবহার করছেন। বিষমুক্ত হওয়ায় শিম-চাষীরা ২৫ থেকে ২৭ টাকা কেজি দরে শিম বিক্রি করছেন। সাতকানিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার মো. শোয়েব মাহমুদ বলেন, আমরা কৃষকদের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ফেরোমোন ফাঁদসহ বিভিন্ন কৃষি প্রযুক্তি বিষয়ে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিচ্ছি। এ সকল প্রযুক্তি ব্যবহার করে একদিকে কৃষকদের উৎপাদন খরচ কমছে অন্যদিকে সাতকানিয়ার কৃষকরা ভাল ফলন পাচ্ছেন।
ফেব্রুয়ারী ১৬, ২০১৮
সৈয়দ মাহফুজ-উন নবী খোকন, সাতকানিয়া
সৈয়দ মাহফুজ-উন নবী খোকন, সাতকানিয়া
No comments