বদলে যাবে মীরসরাই - ৫শ কারখানা নিয়ে হবে অত্যাধুনিক পোশাকপল্লী





মাহবুব পলাশ, মীরসরাই : শুধু বাংলাদেশ নয় এশিয়ার বৃহত্তম পোশাকপল্লী হচ্ছে মীরসরাই উপজেলার অর্থনৈতিক জোন এলাকায় ৫শ কারখানা নিয়ে অত্যাধুনিক পোশাক পল্লী। এই বিষয়ে বেজা কনসালটেন্ট আব্দুল কাদের খান দৈনিক আজাদীকে জানান, এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে উক্ত পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তাদের জন্য অতিরিক্ত সব ধরনের অবকাঠামো সুবিধাসহ একটি মডেল পোশাকপল্লী গড়ে তোলা হবে। এর ফলে বদলে যাবে গোটা মীরসরাইয়ের দৃশ্যপট।
কর্মসংস্থান হবে আরো লক্ষাধিক বেকারের। গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ,সাভার এবং রাজধানীর বাইরে স্থানান্তর করা হচ্ছে ৬০ পোশাক কারখানা।
তিনি আরো জানান, দুই ক্রেতা জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের অ্যাকর্ড এবং উত্তর আমেরিকার অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে এসব কারখানা স্থানান্তরের শর্ত বহু আগের। এগুলোর মধ্যে বেশ কিছু বন্ধ। আর কিছু কারখানা আংশিক চালু রয়েছে। এসব কারখানা নিয়ে আসা হবে মীরসরাইয়ে। ওইসব কারখানা সহ কম–বেশি ৫০০ কারখানা গড়ে তোলা হবে এ পল্লীতে। পুরোদমে প্রাণ ফিরে পাবে নতুন এই অর্থনৈতিক অঞ্চল। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সামান্য দূরত্বে অবস্থানের সুবিধায় এ পল্লীর কারখানাগুলো রফতানিতে লিড টাইম (রফতানি আদেশ পাওয়ার পর ক্রেতার হাতে পণ্য পৌঁছানো পর্যন্ত সময়) সুবিধা পাবে।
উদ্যোক্তাদের ধারণা, পোশাকপল্লীতে উৎপাদন শুরু হলে রফতানি খাতে আরও অন্তত ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি যোগ হবে এবং কর্মসংস্থান বাড়বে। অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এবং বিজিএমইএর মধ্যে আলোচনা অনুযায়ী ইতোমধ্যে ভূমি উন্নয়ন, গ্যাস–বিদ্যুৎ সেবার কাজ শুরু হয়েছে। আগামী এক বছরের মধ্যে পোশাক পল্লী থেকে উৎপাদন শুরুর আশা করা হচ্ছে।
বেজা ও বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, মীরসরাই পোশাক পল্লী ইজারাভিত্তিতে ৫০ বছরের জন্য উদ্যোক্তাদের মাঝে বরাদ্দ দেওয়া হবে। আপাতত ৫০০ একর নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। তবে দুই হাজার একর পর্যন্ত সম্প্রসারণের সুযোগ রাখা হয়েছে। প্রতিটি প্লট হবে কমপক্ষে এক একর। একর প্রতি মূল্য ধরা হয়েছে ১ কোটি টাকা। সহনীয় কিস্তিতে এই অর্থ পরিশোধ করা যাবে। মোট মূল্যের ২৫ শতাংশ বুকিংমানি হিসেবে বিজিএমইএর তহবিলে জমা দিয়েছেন উদ্যোক্তারা। সম্প্রতি এই চুক্তি সই অনুষ্ঠানে ভূমির মূল্য বাবদ ১০০ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে বেজাকে। রাজধানীর হোটেল র‌্যাডিসনে বেজা ও বিজিএমইএর মধ্যে গত ২২ মার্চ উক্ত চুক্তি স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়।
সংশ্নিষ্টরা জানান, অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের কমপ্লায়েন্স শর্তের বাইরেও বেজার নিজস্ব কমপ্লায়েন্স শর্ত প্রতিপালন করতে হবে পোশাক পলহ্মীর কারখানাগুলোকে। বেজার পরামর্শক আবদুল কাদের জানিয়েছেন, পোশাক পল্লীর কারখানাগুলো হবে বিশ্বমানের। দুই ক্রেতা জোটের শর্তের চেয়ে আরও নিরাপত্তামূলক শর্ত প্রতিপালন করতে হবে পোশাক পল্লীর কারখানাগুলোকে।
তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে দেশের পোশাক শিল্প এখনও সম্ভাবনাময়। অন্তত আরও ২০ বছর বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পোশাকের দাপট বজায় থাকবে। এতে ব্যাপক বিনিয়োগ সম্প্রসারণ হবে। এসব বিবেচনায় পোশাক খাতকে সম্ভব সব ধরনের সহযোগিতা দিতে চায় বেজা। তিনি বলেন, বন্দর থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার পশ্চিমে মীরসরাইয়ে পোশাক পল্লীর অবস্থান।


Comments